- আপনার নামে কেউ যদি মামলা করে, বা আপনি যদি কোন মামলার সাক্ষী হন তাহলে কোর্ট থেকে আপনার নামে যে পত্র আসবে সেটি হল সমন।
সমন দুই প্রকারঃ-
- আসামীর প্রতি সমন।
- সাক্ষীর প্রতি সমন।
আসামীর প্রতি সমন কাকে বলেঃ-
- ফৌজদারি কার্যবিধির ৬৮ ধারা অনুযায়ী সমন লিখিত ফরমে দেওয়া হয়। ফরমের উপরে আসামীর প্রতি সমন বা সাক্ষী হলে সাক্ষীর প্রতি সমন লেখা থাকে। সমনের দুই কপি থাকে। স্থানীয় থানা পূলিশের মাধ্যমে সমন জারি করা হয়। যাকে সমন দেওয়া হয় তাকে এক কপি দেওয়া হয়। অন্য কপিতে যার উপর সমন জারি হলো তার স্বাক্ষর নেওয়া হয়।
- সমন যথা সম্ভব ব্যাক্তিগত ভাবে জারী করতে হয়। তা সম্ভব না হলে ফৌজদারী কার্যবিধির ৭০ ধারায় বলা হয়েছে, যার ওপর সমন জারি করা হয় তাকে পাওয়া না গেলে তার পরিবারের বয়স্ক কোনো পুরুষের কাছে সমন বুঝিয়ে দিয়ে আসতে হবে।
- আসামীর প্রতি সমন হলে আসামী আদালতে ব্যাক্তিগত ভাবে বা উকিল মারফত আদালতে হাজির হতে হবে।
সাক্ষীর প্রতি সমন কাকে বলেঃ-
- কোন সাক্ষী সমন পেলে তাকে অবশ্যই আদালতে গিয়ে প্রকৃত ঘটনা বর্ণনা করে সাক্ষ্য দেওয়া উচিত।
- সমন পেয়ে আদালতে কীভাবে হাজির হতে হয় তা অনেক সাক্ষীই জানে না।
- সাক্ষী হিসেবে আদালতে হাজির হতে ভয়ের কোনো কারণ নেই। সাক্ষী আদালতের কাছে বা আইনের চোখে অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি।
- সাক্ষীর প্রতি সমন জারী হলে সাক্ষীকে সমনটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতের কোর্ট সাব-ইন্সপেক্টরের সঙ্গে দেখা করতে হয়। কোর্ট সাব-ইন্সপেক্টর তার সাক্ষ্য দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।
সাক্ষী হইতে যখন আপনি বাধ্য, দেওয়ানি মামলার ক্ষেত্রেঃ-
- ১৯০৮ সালের দেওয়ানি কার্যবিধির ৩১ ধারা অনুসারে দেওয়ানি মামলার সাক্ষীদের প্রতি সমন জারি করা হয়। সাক্ষ্য প্রদান কিংবা কোনো দলিল-প্রমাণ আদালতের সামনে উত্থাপনের জন্য আদালত যে কাউকে তলব করতে পারে। আদালতের সমন পাওয়ার পর ওই ব্যক্তিকে অবশ্যই আদালতে হাজির হতে হয়।
- কোনো সাক্ষী যদি এই নির্দেশ অমান্য করে, সে ক্ষেত্রে আদালতের সামনে তার উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য আদালত প্রয়োজনবোধে সাক্ষীর প্রতি গ্রেপ্তারের পরোয়ানা জারি করতে পারে। শুধু তাই নয়, আদালত এমনকি তার সম্পত্তি ক্রোক এবং বিক্রি, অনধিক ৫০০ টাকা জরিমানা, জামানত দাখিল কিংবা দেওয়ানি কারাগারে অন্তরীণ রেখেও সাক্ষী হিসেবে আদালতে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারে।
সাক্ষী হইতে যখন আপনি বা,ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রেঃ-
- ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৩ ধারা অনুযায়ী, পুলিশ যখন কোনো মামলার তদন্ত করতে গিয়ে কোনো স্থান তল্লাশি করবে, তখন স্থানীয়দের মধ্য থেকে দুই বা তার বেশিসংখ্যক সম্মনীয় লোককে সাক্ষী হিসেবে তলব করবে।
- ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৩ ধারা অনুযায়ী, পুলিশ যখন কোনো মামলার তদন্ত করতে গিয়ে কোনো স্থান তল্লাশি করবে, তখন স্থানীয়দের মধ্য থেকে দুই বা তার বেশিসংখ্যক সম্মনীয় লোককে সাক্ষী হিসেবে তলব করবে।
- সে ক্ষেত্রে দণ্ডবিধির ১৮৭ ধারা অনুসারে (বিস্তারিত নিচে দ্রষ্টব্য) অপরাধের দায়ে সে অভিযুক্ত হবে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬০ ধারা অনুসারে, কোনো অপরাধ সংঘটনের পর পুলিশ যখন তার তদন্তে নামে, তখন অপরাধ কাজের সঙ্গে পরিচিত যে কোনো ব্যক্তিকে পুলিশ তলব করতে পারে। বিচারকাজ চলাকালে আদালত সময়ে সময়ে সাক্ষীদের হাজির হওয়ার নির্দেশ দিতে পারেন। ফৌজদারি কার্যবিধির বহু ২৪৪, ১৪৫-সহ বহু ধারায় আদালতের এই ক্ষমতা স্বীকৃত।
আদালতে হাজিরা দেয়ার সময় সাক্ষীকে কোনো পুলিশ সদস্যের সঙ্গে দেয়া যাবে না। এমনকি আদালতের সামনে উপস্থিত হওয়ার সময় পুলিশ কর্তৃক কোনো প্রকার বাধা কিংবা অসুবিধার সৃষ্টি করা যাবে না। তবে আদালতের সামনে উপস্থিত হওয়া থেকে কোনো সাক্ষী বিরত থাকতে চাইলে সে ক্ষেত্রে পুলিশ তাকে আদালতের সামনে জোরপূর্বক হাজির করতে পারবে।‘
Amazing wrt
ReplyDelete